দাগানভূঞায় টায়ার পুড়িয়ে তৈরী হচ্ছে তেল ; হুমকির মুখে জীবনমান

দাগানভূঞায় টায়ার পুড়িয়ে তৈরী হচ্ছে তেল ; হুমকির মুখে জীবনমান
ফেনী প্রতিনিধি:-
অনুমোদন ছাড়াই ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর জায়লস্করে দীর্ঘদিন যাবত  টায়ার পুড়িয়ে তেল তৈরী করছে আহম্মেদ ট্রেড কর্পোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যদিও শুরুর দিকে কারখানাটি গড়ে উঠে প্লাস্টিক জাতীয় জিনিসপত্র ভাংচুর করে তা অন্যত্র বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। কিন্তুু সময়ের সাথে তা অনুমতিহীন তেল কারখানায রুপান্তর লাভ করে। স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ দিয়েও পাচ্ছেনা কোন প্রতিকার। এ নিয়ে আত্র অঞ্চলের মানুষদের মাঝে করছে ক্ষোভের বিরাজ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের নিকটবর্তী জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর জায়লস্কর গ্রামে এইচ.এম রহমান ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন স্থানে কারখানা গড়ে তোলে আহম্মেদ ট্রেড কর্পোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এনায়েতপুর গ্রামের নুর আহম্মেদের ছেলে রেজা আহম্মেদ এ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। শুরুর দিকে কারখানাটিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্লাস্টিকের অব্যবহৃত ভাঙ্গা-চুরা অংশ ও জিনিসপত্র সংগ্রহ করে তা  দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হতো। কিন্তুু সময়ের সাথে মালিক পক্ষ আড়ালে এটিকে রুপান্তর করে টায়ার পুড়িয়ে তেল তৈরীর কারখানা হিসেবে। হঠাৎ কারখানার চারদিকে দিনভর ধোঁয়া নির্গমন শুরু হলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। কয়েক মাসের মধ্যেই আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা ও অন্যান্য জীব বৈচিত্রে পরিবর্তন দেখা দিলে এলাকাবাসী দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই কার্যালয় থেকে কোন প্রকার প্রতিকারের আভাস না পেয়ে তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালকের কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তুু এর পরও স্থানীয়রা কোন প্রকার প্রতিকার পাচ্ছেনা অভিযোগ উঠেছে। কারখানাটির মালিক রেজা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপে নিচ্ছেনা বলে জানায় স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় জানান, কারখানাটির আশপাশে গাছ গাছালী সব মরে যাচ্ছে। পাক-পাখালী শূণ্য হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। ক্ষতির কবল থেকে বাচতে শুরুতে কারখানাটির মালিকের সাথে বার বার দেখা করে এর প্রতিবাদ করি। কিন্তুু এতে সে কর্ণপাত করছে না দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাই। তারপরও অজ্ঞাত কারণে কারখানাটির বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপে যাচ্ছেনা প্রশাসন। পরে আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করি।
এদিকে চিকিৎক সমাজ বলছেন, দীর্ঘ দিন যাবত এ ধরনের বিষাক্ত ধোঁয়ার মধ্যে থাকলে একজন সুস্থ্য মানুষের মাধ্যে দীর্ঘ মেয়াদী শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। শিশুরা আক্রান্ত হতে পারে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ রোগব্যাধিতে।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে আমি বেশ কয়েকবার ওই কারখানাটি পরিদর্শন করি। কিন্তু তখন কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে আমি পাইনি। তবে অচিরেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
পরিবেশ অধিদপ্তর ফেনীর উপ পরিচালক সুকুমার সাহা জানান, শুরু থেকেই কারখানাটি অনুমতি ছাড়পত্র ছাড়াই কার্যক্রম শুরু করে। স্থানীয়দের অভিযোগের পর আমরা কারখানা স্বত্ত্বাধিকারীকে নোটিশ করি। কিন্তুু নোটিশের মেয়াদ পার হলেও তারা কোন জবাব দিচ্ছেনা। এমতাবস্থায় কারখানাটির বিরুদ্ধে শিঘ্রই আমরা আইনগত পদক্ষেপের দিকে যাবো।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment